প্রকাশিত: Sat, Feb 11, 2023 4:29 AM
আপডেট: Sun, Dec 7, 2025 10:17 AM

সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর এবং সামাজিক মাধ্যমের সমালোচনা

শামীম আহমেদ : লিফট দেখতে সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশ যাচ্ছেন, এই ধরনের খবর আজকাল নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখি। আমি মনে করি এটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভালো দিকগুলার একটা। এসব নিউজের পর প্রচুর আলোচনা, সমালোচনা হয়Ñ অর্ধেক ভ্রমণ বাতিলও হয়ে যায়। আবার এইসব খবরের ভয়ে এমন অপ্রয়োজনীয় শত শত ভ্রমণের পরিকল্পনা নিতেই নিশ্চয় ভয় পায় অনেক মন্ত্রণালয়। যেসব সরকারি কর্মকর্তারা পুকুর কাটা, সাঁতার কাটা, কান কাটা নানা প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশ যান, তাদের পরিবারের সদস্যরা তাদের তিরস্কার করলে সবচেয়ে দ্রুত এসব ‘ছ্যাবলামি’ বন্ধ হবে। 

আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা শিক্ষা ভ্রমণের নামে ইউনিভার্সিটি অফ টরোন্টোতে আসছেন, তাদের সাথে আমার ডিপার্টমেন্টের ডিনের মিটিংয়ে আমাকেও থাকতে হয়েছে। সেখানে কোনো শিক্ষার আদানপ্রদান হয়েছে বলে মনে হয় নাই। সরকারি কর্মকর্তাদের অবার্চীনের মতো প্রশ্ন শুনে মনে হয়েছে, ডিন নিশ্চয় ভাবছিলেনÑ আমি এখানে এডমিশন পেলাম কী করে? 

একজন সচিব আমাদের ডিনকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি আমার ছেলেকে আপনার ইউনিভার্সিটিতে পড়াতে চাই। কীভাবে পড়াব? ডিন অবাক হয়ে ১০ মিনিট ধরে সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন। তারপর সেইসব স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নায়াগ্রা ঘুরে, প্রচুর রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করে, আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা করে, বাজার ঘাট করে, পারডিয়ামের টাকা নিয়ে দেশে ফিরে গেলেন। সরকারি কর্মকর্তাদের এসব ভ্রমণে আনার জন্য স্থানীয় সুবিধাভোগীদেরও আগ্রহ থাকে। লাভের টাকার ভাগ তারাও পায়। আবার তারাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সারাক্ষণ দেশ ও সরকারের সমালোচনায় উচ্চকিত থাকে। 

আমরা শুধু পুকুর কাটা, সাঁতার কাটা, লিফট কেনা, পর্দা কেনা নিয়ে মশকরা করি। কিন্তু শিক্ষা সফরের নামে যেসব ভ্রমণ টমন হয়, সেখানেও সরকারের টাকা খরচ ও টাকা ভাগাভাগি ছাড়া অন্য কিছু হয় না। বড় বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানে একটা অহেতুক ট্রিপ, দ্বিতীয় শ্রেণীর ইউনিভার্সিটি থেকে একটা অকার্যকর সার্টিফিকেটÑ এইসব বন্ধ করার জন্য একজন ন্যায়পাল নিয়োগ দেয়া দরকার মনে হয়।

  লেখক ও জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা